শনিবার, জুন ৭, ২০২৫
spot_img

এখন সংঘাত এড়াতে নয়, পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত- নিউইয়র্ক টাইমস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারত শাসিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উভয়পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।

তবে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত এখন সংঘাত এড়াতে নয়, পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে একাধিক দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং দিল্লিতে কূটনৈতিক ব্রিফিং চালাচ্ছেন। এসব প্রচেষ্টা মূলত পাকিস্তানে সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরার জন্য।

সম্প্রতি সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা বেড়েছে এবং কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে বহুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের ঘোষণাসহ দেশটির কূটনীতিক ও নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশও দিয়েছে ভারত। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিত করেছে।

কাশ্মীরের বাইরে কাশ্মীরি মুসলিম শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। যদিও ভারত সরকার হামলার জন্য সরাসরি কোনো গোষ্ঠীকে দায়ী করেনি, তবে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার কিছু প্রযুক্তিগত প্রমাণ থাকার দাবি করেছে। পাকিস্তান সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রমাণের অভাব দুই সম্ভাবনা ইঙ্গিত করে— হয় ভারত আরও তথ্য সংগ্রহ করছে, নয়তো আন্তর্জাতিক ব্যাখা ছাড়াই পদক্ষেপ নিতে চায়। ভারতের বর্তমান কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানও এ সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে।

মার্কিন বিশ্লেষক ড্যানিয়েল মার্কির মতে, উভয় পক্ষই নিজেদের সংকট সামলানোর সক্ষমতা অতিরঞ্জিত করে দেখছে, ফলে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

ইরান, সৌদি আরব, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দুই পক্ষকে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় সমর্থন জানিয়েছে, যদিও দক্ষিণ এশিয়া এখন তাদের অগ্রাধিকারে নেই।

২০১৯ সালের মতো এবারও ভারত ‘বড় ধরনের’ সামরিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। তবে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে এক অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে। এটি আমলে নিয়ে ভারত দাবি করছে, পিআরএফ লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন।

ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন মনে করেন, মোদি সরকারের সামনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া তেমন বিকল্প নেই। তবে তিনি আশাবাদী, উভয় দেশ সংঘাতকে নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রাখবে।

তবে অনেক কূটনীতিক সতর্ক করেছেন, অতীতের রেকর্ডের ওপর ভিত্তি করে পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

- Advertisement -spot_img
  • সর্বশেষ
  • পঠিত

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত