রবিবার, জুন ৮, ২০২৫
spot_img

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে, সেটির পুনর্বিবেচনা চেয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার ৭ এপ্রিল এই চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে লিখেন, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করার জন্য লিখছি যে বাংলাদেশে আমরা আপনার বাণিজ্য এজেন্ডাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেব।

তিনি বলেন, আপনার শপথ গ্রহণের পরপরই, আমি ওয়াশিংটন ডিসিতে আমার উচ্চ প্রতিনিধিকে দ্রুত বর্ধনশীল ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশের বাজারে আমেরিকান রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে আমাদের ইচ্ছার কথা জানাতে পাঠাই। আমরাই প্রথম দেশ যারা এই ধরণের সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরাই প্রথম দেশ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য বহু-বছর মেয়াদী চুক্তিতে প্রবেশ করেছি এবং আপনি এলএনজি রপ্তানি পারমিটের ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর থেকে আরও সহযোগিতার সন্ধান করছি।

তিনি বলেন, তখন থেকে, আমাদের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আমেরিকান রপ্তানি দ্রুত বৃদ্ধির জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলো চিহ্নিত করতে কাজ করছেন। আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা আমাদের পদক্ষেপের বিস্তারিত সম্পর্কে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করবেন।

চিঠিতে তিনি আরও বলেন, আমাদের পদক্ষেপের একটি মূল লক্ষ্য হলো তুলা, গম, ভুট্টা এবং সয়াবিনসহ মার্কিন কৃষিপণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা, যা মার্কিন কৃষকদের আয় এবং জীবিকা নির্বাহে অবদান রাখবে। মার্কিন তুলার বাজারে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য, আমরা বাংলাদেশে ডেডিকেটেড বন্ডেড গুদামজাতকরণ সুবিধা চূড়ান্ত করছি। যেখানে তাদের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার থাকবে।

আপনারা জেনে খুশি হবেন যে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে বেশিরভাগ মার্কিন রপ্তানির ওপর বাংলাদেশের সর্বনিম্ন শুল্ক রয়েছে। আমরা উপরোক্ত আমেরিকান কৃষি পণ্যের পাশাপাশি স্ক্র্যাপ ধাতুর ওপর শূন্য শুল্কের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো শীর্ষ মার্কিন রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক হ্রাসের জন্য কাজ করছি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা মার্কিন রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু বাধা অপসারণ করছি। আমরা কিছু পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা দূর করছি, প্যাকেজিং, লেবেলিং এবং সার্টিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা ও বাণিজ্য সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি যার মধ্য রয়েছে সহজ শুল্ক পদ্ধতি এবং মান সহজীকরণ।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এই গতি বেসামরিক বিমান চলাচল এবং প্রতিরক্ষাসহ বেশ কয়েকটি উন্নত প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে মার্কিন ব্যবসার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চিঠিতে বলেন, আমরা আগামী ত্রৈমাসিকের মধ্যে চলমান এবং পরিকল্পিত পদক্ষেপগুলো সম্পন্ন করব। মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় সময় দিন। তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি রপ্তানির ওপর পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থার প্রয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখুন।

- Advertisement -spot_img
  • সর্বশেষ
  • পঠিত

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত