রবিবার, জুন ৮, ২০২৫
spot_img

যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে : জামায়াত আমির

বার্তা পরিবেশক :  অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘যৌক্তিক সময় বলতে সংস্কারের জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন তার বেশি নয়।’ শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় নেতা, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, পেশাজীবী, শিক্ষাবিদ, কবি-সাহিত্যিক, ডাক্তার, সাংবাদিক, গবেষক, ব্যবসায়ী ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের অংশীজনদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে মুক্ত পরিবেশে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হতে পেরে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ।’

‘আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ ইফতার মাহফিলে যারা শরীক হয়েছেন আমি তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করছি। আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানানোর কোনো ভাষা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর কেটে গেছে, বহুবার ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম তা আজো পূরণ হয়নি। কেন তা পূরণ হয়নি তা বিশ্লেষণের অবকাশ নেই। আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি মিলাতে পারছি না। যারাই ক্ষমতায় গেছে, তারাই নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশে অস্থিরতা চলে আসছে। জুলুম নির্যাতন কখনই বন্ধ হয়নি। জাতি অন্ধকার থেকে মুক্তি পায়নি। মাগুরার আট বছরের একটি অবুঝ শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জা ও বেদনার। আমরা তার জানমাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দিতে পারিনি। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। রাষ্ট্র যদি মানুষকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারে তাহলেই মানুষ প্রকৃত মানুষ হতে পারে। আমাদের দেশে শিক্ষিত লোকের অভাব নেই। কিন্তু প্রকৃত শিক্ষার অভাব রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষার অভাবে মানুষ সত্যিকার মানুষ হতে পারছে না। দোয়া করি এ জাতিকে যেন আমরা প্রকৃত নৈতিক শিক্ষা দিতে পারি। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সেই মেরদণ্ড যদি শক্ত না হয়, তাহলে সেই জাতি কীভাবে শক্ত হবে। এই জন্য জাতিকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। তা হলেই জাতি শক্তিশালী হবে।’

তিনি বলেন, ‘জামায়াতের শীর্ষ পাঁচজন নেতাকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করা হয়েছে। আরো ছয়জন নেতাকে কারাগারে বন্দি রেখে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরণ করতে বাধ্য করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে জাতি মুক্তি পেয়েছে। জেলখানা থেকে অনেকেই মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রিয় নেতা আজহার ভাই মিথ্যা মামলায় এখনো জেলখানায় অমানবিক যন্ত্রণা ভোগ করছেন। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়া হোক। আর যেন আইনের মারপ্যাঁচে তাকে বন্দি করে রাখা না হয়। আমাদের আজহারুল ইসলাম ভাইকে অবিলম্বে আমাদের মাঝে যেন ফিরিয়ে দেয়া হয়, এই কামনা করি।’

‘বিগত জালেম সরকার অনেকের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। চোখ তুলে ফেলেছে। বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই আওয়ামী জাহিলিয়াত আর যেন দেশে ফিরে না আসে।

আমি সম্মানের সাথে স্মরণ করছি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন ও আহত হয়েছেন তাদেরকে। মহান রাব্বুল আলামীন নিহতদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন ও আহতদের শিগগির সুস্থতা দান করুন।’

এ ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস, বিএনপি নেতা সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবী, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, মাওলানা মুনির হোসাইন কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমদ, কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক জনাব রাশেদ খান, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের নেতা মাওলানা মুনতাসিম বিল্লাহ মাদানী, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, জাগপার চেয়ারম্যান রাশেদ প্রধান, ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গণি, লেবার পার্টির সভাপতি ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরহাদুজ্জামান ফরহাদ, সারোয়ার কামাল আজিজি, আমির নেজামি ইসলাম পার্টি, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ, আজিজুল হক আজিজ হবিগঞ্জী আমির, মসলিম জনতা ঐক্য পরিষদ, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুসাবিন ইজহার, মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, মুফতি ফয়জুল্লাহ আশরাফী, মাওলানা শায়েখ কামাল উদ্দীন জাফরী, মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী, অধ্যাপক ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, আমির, মুফতি ফখরুল ইসলাম, অধ্যাপক মাওলানা আশরাফ আলি আকন, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা নেসারুল হক, মুফতি ইজহারুল হক, মুফতি ইয়ামিন, মাওলানা কাজী ইব্রাহিম, মাওলানা মুফাজ্জল হোসেন খান, মাওলানা তাওহিদুল আনোয়ার, মুফতি সাঈদ আহমাদ মোজাদ্দেদী, কাজী হারুন, খোরশেদুল হক, আবদুল জলিল, সাংবাদিক ও দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদ, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক মীর শাহীদুল হক আজম, মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক বাহাউদ্দিন, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার, দি নিউনেশন পত্রিকার সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন ও নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী, কালবেলা পত্রিকার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, সাপ্তাহিক সোনার বাংলার বার্তা সম্পাদক ফিরদাউস আলম ভূঁইয়া ও চিফ রিপোর্টার শাহাদাত হোসাইন হারুন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম ও সাবেক সভাপতি সরদার ফরিদ, দৈনিক সংগ্রামের বার্তা সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালের অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুর রহমান, সাবেক সচিব ড. মিয়া মুহাম্মাদ আইয়ুব, সাবেক সচিব ফজলুর রহমান, কর্নেল আইয়ুবুর রহমান, পেট্রোবাংলার এমডি কামারুজ্জামান, কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাসিনুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল হক, ইবনে সিনা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু নাসের মুহাম্মাদ আব্দুজ্জাহের, কৃষিবিদ কামাল উদ্দিন, বারির সাবেক মহাসচিব কৃষিবিদ ড. শহিদুল ইসলাম, বিএলআরআই-এর সাবেক পরিচালক ড. মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম, বিজেডিএস-এর সাবেক ডিজি ড. আবদুল জব্বার, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এম এ হান্নান, কৃষিবিদ সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান রিন্টু।

এ ইফতার মাহফিলে জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল ও অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়ার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব, সাইফুল আলম খান মিলন ও মুবারক হোসাইন, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মাদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট মশিউল আলম, ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির সাবেক এমপি শাজাহান চৌধুরী, গাজীপুর মহানগরী আমির অধ্যাপক মো: জামাল উদ্দিন, কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দ্বীন মুহাম্মাদ, ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় অফিস সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুস সাত্তার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

শহীদ আবু সাঈদের দু’ ভাই রমজান আলী ও আলী হোসেন এবং জামায়াত-শিবিরের শহীদ ও মাজলুম নেতাদের পরিবারের সদস্য এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের বেশ কয়েকটি শহীদ পরিবারের সদস্যরা ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। মহাগ্রন্থ আল কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে ইফতার মাহফিল শুরু হয়।

ইফতারের আগ মুহূর্তে জামায়াত আমির মাহফিলে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে দেশ ও জাতি এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ইফতার মাহফিল সঞ্চালনা করেন।

- Advertisement -spot_img
  • সর্বশেষ
  • পঠিত

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত