নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে রাঙ্গামাটিতে শনিবার (১২ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে পাহাড়িদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি। চাকমারা বিজু, মারমারা সাংগ্রাই, তংচঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু এবং ত্রিপুরার বৈসু নামে এ উৎসব পালন করেন। সমতলের মানুষের কাছে এ উৎসব বৈসাবি নামে পরিচিত। বৈসাবির আনন্দে মেতেছে পাহাড়ের মানুষ।
বাংলা বছরের শেষ দু’দিন ও নববর্ষের দিন পালন করা হয় এ উৎসব। পাহাড়ি অঞ্চলের আনাচে-কানাচে এখন বৈসাবি উৎসবের আমেজ। বৈসাবির প্রথম দিন ১২ এপ্রিল ফুল বিজু। এই দিনে চাকমা, তংচঙ্গ্যা ও ত্রিপুরায় ফুল দিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো হয় আর নদীতে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় জানায়। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসুতে আয়োজন করা হয় ফুল ভাসানো, বয়স্ক স্নান, বস্ত্র দান, নাচ, গান ও ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা। এ আয়োজনে রয়েছে চাকমা ও তংচঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলাসহ বলী খেলা ও নাটক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ।
এরপর ১৩ এপ্রিল মূল বিজু, বৈসাবি উৎসবের জনপ্রিয় খাবার পাজন নামে একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরী করা হয় ঘরে ঘরে। ২৫ থেকে ৩০ ধরনের সবজির মিশ্রণে রান্না করা হয় এ বিশেষ সবজি। পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে বাহারি খাবারের আয়োজনও চলে।
অন্যদিকে ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষবরণ উৎসবের পর ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় মারমাদের মারমারা সাংগ্রাই নামে জলকেলী উৎসব। মারমারা বিশ্বাস করে জলকেলীর মাধ্যমে পুরনো দুঃখ-কষ্ট ধুয়ে ফেলা যায় এবং নতুন বছর সুখ সমৃদ্ধি বয়ে আনে।
বৈসাবি শুধুমাত্র পার্বত্য অঞ্চলেরর একটি উৎসব নয়, এটি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মিলন মেলার প্রতীক।