আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সংস্কারের জন্য মামলা দ্রুত ও স্বল্প খরচে নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং মামলার অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়।
শনিবার (১৪ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যালয়ে আয়োজিত ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর প্রাথমিক খসড়া নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার কার্যক্রমে আমরা তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। প্রথমত, দ্রুত ও স্বল্পতম সময়ে অল্প খরচে মামলা নিষ্পত্তির জন্য কাজ করছি। এই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেওয়ানি কার্যবিধির পরিবর্তন করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আশা করছি, এক মাসের মধ্যেই এটি অধ্যাদেশ আকারে পাস করা সম্ভব হবে।
সংস্কারের দ্বিতীয় লক্ষ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। এটি নিশ্চিত করতে বিচার ব্যবস্থায় ডিজিটালাইজেশন আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিচারকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাক্রমের মান উন্নয়নের বিষয়েও কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বিচার বিভাগের সব সদস্যের সম্পদের হিসাব নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তা নিয়ে আরও কার্যক্রম চলবে। পাশাপাশি, আইনজীবীদের সহায়তায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
তৃতীয় লক্ষ্য হচ্ছে মামলার অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া। এই উদ্দেশ্যে আইনগত সহায়তা সংস্থার অধীনে থাকা বিভিন্ন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা জানান, দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৫ লাখ মামলা হয়। সেখানে সরকারি আইনগত সহায়তার মাধ্যমে মাত্র ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়। কিন্তু এই মাধ্যমের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে সময় কম লাগে এবং ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সেবা গ্রহীতারা সন্তুষ্ট থাকেন।
এটি আমাদের জন্য বড় সুযোগ, বলেন তিনি। যদি এই কর্মসূচিকে আরও সম্প্রসারণ করা যায়, দক্ষ জনবল দেওয়া যায়, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরও সমৃদ্ধ করা যায়-তাহলে এই মাধ্যমে এক থেকে দুই লাখ মামলা মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে। আমাদের লক্ষ্য, অন্তত এক লাখে পৌঁছানো। তবে দুই লাখও সম্ভব।
সভায় বিভিন্ন জেলার আইনজীবী সমিতির নেতা, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধি, আইন মন্ত্রণালয় এবং আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন