রবিবার, জুন ৮, ২০২৫
spot_img

স্কেভেটরের আঘাতে বিলীন হচ্ছে বাঁকখালী নদীর উভয় পাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাঁকখালী নদীর দুই পাড়ে ছড়িয়ে থাকা জমিগুলো হুমকির মুখে। স্থানীয় জিয়াবুল সওদাগর ও পুত্র জামশেদ বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে কেটে নিচ্ছেন কৃষিজমি ও নদীর পাড়ের উর্বর মাটি। প্রশাসনের চোখের সামনে, আইনের তোয়াক্কা না করে—এই ভূমিদস্যুদের কার্যকলাপে নাভিশ্বাস উঠেছে এলাকাবাসীর। তাদের অভিযোগ, সারাদিন ট্রাক আর ডাম্পার চলাচলে ধুলোর ঝড় উঠে। ফসল হয় না, বাড়ি-ঘরের রং বদলে গেছে। এলাকার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, অথচ কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামু কলঘর বাজার সংলগ্ন ফুঁয়ারচর এলাকায় স্কেভেটর দিয়ে গভীরভাবে কেটে ফেলা হচ্ছে ফসলি জমি। অদূরেই মাটি বহনকারী ডাম্পার-ট্রাকের দীর্ঘ সারি। কৃষকরা যেখানে ধান, বেগুন, মরিচ, মুলা ও শাকসবজি চাষ করতেন, সেই জমিগুলো এখন বিশাল গর্তে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ৮ থেকে ১০ বছর ধরে জামশেদ ও তার পরিবারের নেতৃত্বে চলে আসছে এই মাটি কাটার অবাধ ব্যবসা। কৌশলে নামমাত্র টাকায় জমির মালিকদের বশে এনে এবং অনেক ক্ষেত্রে জোরপূর্বক মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটা ও নির্মাণ প্রকল্পে। প্রতিবাদ করলে কৃষকদের ওপর চালানো হয় হামলা ও ভয়ভীতি। একাধিকবার অভিযোগ করেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।

অভিযোগ রয়েছে, এই পুরো প্রক্রিয়া চলছে একটি ঊর্ধ্বতন সিন্ডিকেটের নিরব সহযোগিতায়। মোটা অঙ্কের মাসোহারা দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে ‘ম্যানেজ’ করেই বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই তাণ্ডব। মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযানে জরিমানা করলেও পরদিন থেকেই আবার শুরু হয় মাটি কাটার মহোৎসব।

এলাকাবাসীর মতে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে দায় এড়িয়ে যাওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বছরের পর বছর এঅবস্থা চলতে থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে চলে যেতে দেখা যায়।

রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম বলেন, এলাকার মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। তবে, তাদের ধ্বংসযজ্ঞ এখনও চলমান, যা একটি দুঃখজনক সত্য। তবে আমি আশ্বস্ত করছি, এসিল্যান্ড দায়িত্বে ফিরে এলে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

- Advertisement -spot_img
  • সর্বশেষ
  • পঠিত

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত