বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে ‘সেভেন সিস্টার্স’ খ্যাত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এ নিয়ে ভারতজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ড. ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘স্থলবেষ্টিত’ এবং বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের ‘সমুদ্র প্রবেশাধিকারের অভিভাবক’ হিসেবে স্থান দেয়ার কয়েকদিন পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জয়শঙ্কর বিমসটেকে ভারতের কৌশলগত ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি বঙ্গোপসাগরে ভারতের দীর্ঘতম উপকূলরেখা এবং পাঁচটি বিমসটেক সদস্যের সাথে এর ভৌগোলিক সংযোগের ওপর আলোকপাত করেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘতম উপকূলরেখা রয়েছে, যা প্রায় ৬,৫০০ কিলোমিটার। ভারত কেবল পাঁচটি বিমসটেক সদস্যের সাথেই সীমানা ভাগ করে না, তাদের বেশিভাগকে সংযুক্ত করে এবং ভারতীয় উপমহাদেশ ও আসিয়ানের মধ্যে সংযোগের একটি বড় অংশও প্রদান করে। বিশেষ করে আমাদের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলটি বিমসটেকের জন্য একটি সংযোগ কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, যেখানে অসংখ্য সড়ক, রেলপথ, জলপথ, গ্রিড ও পাইপলাইনের নেটওয়ার্ক রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সচেতন যে এই বৃহত্তর ভূগোলে পণ্য, পরিষেবা ও মানুষের সুষ্ঠু প্রবাহের জন্য আমাদের সহযোগিতা ও সুবিধা প্রদান একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত। এই ভূ-কৌশলগত বিষয়কে মাথায় রেখে আমরা গত দশকে বিমসটেককে শক্তিশালী করার জন্য ক্রমবর্ধমান শক্তি ও মনোযোগ নিবেদিত করেছি। আমরা আরো বিশ্বাস করি, সহযোগিতা একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি, পক্ষপাতদুষ্ট বিষয় নয়।’
প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি চীন সফরের সময় ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যে ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য এখনো স্থলবেষ্টিত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, সমুদ্রের সাথে তাদের যোগাযোগের কোনো উপায় নেই। ঢাকা এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।
মূলত অধ্যাপক ইউনূসের এই মন্তব্য নিয়ে ভারতের রাজনীতিবিদ, সাবেক আমলা ও নীতিনির্ধারকদের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। সূত্র : এনডিটিভি