রবিবার, জুন ৮, ২০২৫
spot_img

ব্রাজিলকে গুঁড়িয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মনুমেন্তালে নামার আগেই সুখবরটা পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। উরুগুয়ে-বলিভিয়া ম্যাচ ড্র হওয়ায় ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয়েছিল, আর সেই উচ্ছ্বাস যেন মাঠে ফুটে উঠল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের বিপক্ষে। শুরুতেই বোঝা যাচ্ছিল, লিওনেল স্কালোনির দল ভিন্ন কিছু করতে চলেছে।

ম্যাচ শুরুর পর মাত্র ৪ মিনিটেই ব্রাজিলের জালে বল পাঠিয়ে দেন জুলিয়ান আলভারেজ। থিয়াগো আলমাদার দুর্দান্ত পাস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডিফেন্ডারদের পরাস্ত করে ঠা-া মাথায় গোলকিপার বেন্তোকে হারিয়ে দেন তিনি। ৮৫ হাজার দর্শকের কণ্ঠে তখনই ‘ওলে, ওলে’ ধ্বনি, যেন ম্যাচের ভাগ্য শুরুতেই লেখা হয়ে গেছে।

ব্রাজিল নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার আগেই ১২ মিনিটে ফের আর্জেন্টিনার গোল! ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডে ১১ জন খেলোয়াড় নিজেদের মধ্যে ৩৩ পাস খেলে বল দেন এনজো ফার্নান্দেজকে। ডান পায়ের শটে বল জালে পাঠান  চেলসির এই মিডফিল্ডার।

ব্রাজিল তখন পুরোপুরি দিশেহারা। মাঠে তারা যেন আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। ঠিক এমন সময়, ম্যাচে ফিরে আসার একমাত্র সুযোগ এনে দেয় আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোর এক ভুল। ২৬ মিনিটে তিনি নিজের বক্সের সামনে বল ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন, যেন দেখছিলেন, কুনিয়া আসবেন কি না! কুনিয়া সময় নষ্ট না করে বল কেড়ে নিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে ব্রাজিলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।

কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। ৩৭ মিনিটে আলভারেজের পাস ধরে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে আলেক্সিস ম্যাকঅ্যালিস্টার আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোল করেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ইতিহাসে প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করার নজির খুব কমই আছে ব্রাজিলের।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্রাজিল কিছু পরিবর্তন আনলেও আক্রমণে ধার বাড়াতে পারেনি। বরং ৭১ মিনিটে আর্জেন্টিনার হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন বদলি নামা জিউলিয়ানো সিমিওনে। তার গোলের পর ব্রাজিল যেন পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি শেষ হয় ৪-১ ব্যবধানে।

এই পরাজয়ের ফলে ব্রাজিল শুধু পয়েন্ট টেবিলেই পিছিয়ে পড়েনি, বরং তাদের ফুটবলের শক্তির জায়গা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কোচ দোরিভাল জুনিয়র স্বীকার করলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা কাজ করেনি। আর্জেন্টিনা আমাদের সম্পূর্ণভাবে ছাপিয়ে গেছে।’

ব্রাজিলের অধিনায়ক মার্কিনহোসও বললেন, ‘এটা শুধু কোচের দোষ নয়, আমাদেরও দায় আছে। আর্জেন্টিনা কঠিন সময় পার করে ফিরে এসেছে, আমরাও পারব।’

কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই মুহূর্তে আর্জেন্টিনা দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলে সবচেয়ে বড় শক্তি, আর ব্রাজিল এখন নিজেদের অস্তিত্বের সংকটে। ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হারের পর এই প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অন্তত ৪ গোল হজম করল ব্রাজিল। আর দক্ষিণ আমেরিকান কোনো দলের বিপক্ষে চার গোল হজম করল ১৯৮৭ কোপা আমেরিকার পর।

১৪ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা বাছাইয়ে টেবিলের শীর্ষে আর্জেন্টিনা। সমান ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ইকুয়েডর। মঙ্গলবার চিলির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে তারা। ১৪ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় উরুগুয়ে। ব্রাজিলের সংগ্রহও ১৪ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট, তারা আছে চারে।

- Advertisement -spot_img
  • সর্বশেষ
  • পঠিত

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত